আমাদের দেশে ক্যারিয়ার ছিল দুই ধরনের; ব্যারিস্টারি আর ইংরেজি জানা দফতরি। এখনের সময় এটা হয়ে গেছে ডাক্তারি আর ইঞ্জিনিয়ারিং। বিশেষ করে মেয়ে হলে ডাক্তার, ছেলে হলে ইঞ্জিনিয়ার। তবে যে যাই হোক না কেন পাশ করার পর প্রশ্ন আসবে বিসিএস নাহয় উচ্চশিক্ষা। দেশে থেকে বিসিএস না দিয়ে কেউ থাকতে পারবেনা। আর থাকলে বাঞ্চনা আর কথা শুনতে হবে বাকি জীবন, এইবার নিজের কাছে যতই সফল হউক না কেন। মা বাবাকে সান্তনা দেয়া আর সমাজ কে চুপ করে রাখাটাই বাংলাদেশে বসবাস করার একমাত্র সহি উপায়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা; মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলা; সমাজ, দেশ, সংস্কৃতি, ধর্ম নিয়ে কথা বলা; নিজের ইচ্ছা নিয়ে কথা বলা এই দেশে সম্ভব না। মূল কথা নিজে যদি একূল হই তাহলে সমাজ, মা-বাবা ও বাকি সব ওকূল; দোকুল নিয়ে একসাথে চলা প্রায় অসম্ভব।
তো আমি মনে হয় এর একটা সমাধান পেয়ে গেছি যা সহি এবং উচ্চসহি। যেখানে সবাই খুশি এবং দোকুল নিয়ে চলা যায়। তা হচ্ছে সন্তানকে শুরুতেই বর্তমানে বহু প্রচলিত ও সফল দুটো ধারার একটিতে দিয়ে দিতে হবে। একটি হচ্ছে স্কুল হতেই চলমান রাজনৈতিক দলের ছাত্রশাখায় অনুপ্রবেশ করানো এবং সেই গাছে একটু একটু পানি দেয়া। কিছুদিনেই পাতা ডালপালা ছড়িয়ে সন্তান সমাজকে চুপ করিয়ে মা-বাবা কে বাংলাদেশ নামক জটের মাঝে স্বর্গ দেখিয়ে দিবে (আর ইয়ে, সন্তানকে নিয়ে ভয়-ভীতি তো প্রত্যেক পিতা মাতার ই থাকে)। সন্তান খুশি, মা-বাবা খুশি, সমাজ খুশি বা চুপ।
আরেকটি ধারা হচ্ছে তিনপক্ষ খুশি ধারা। সন্তানকে দুনিয়াবি বিষয়ে একদম ই জরানোর দরকার নাই। নাজুক অবস্থাতেই দিয়ে দিতে হবে আল্লারওয়াস্তে। জীবন, যৌবন কিছু চড়াই উৎরাই পেরিয়ে যখন মোল্লা হয়ে যাবে তখন আর তাকে কে ঠেকায়। রাস্তা ঘাটে সালাম, ভাল ভাল খাবার আর সারা সোনার বাংলা থেকে মাহফিলের নিমন্তন। এই ব্যাক্তি যেখানে যা বলবে সবাই বলবে "ঠিক"। আস্তে বললে সে ধমক দিবে "আওয়াজ নাই কেনো? বলেন, ঠিক"। সবাই বলবে "ঠিক"। তাঁর কোন শত্রু নাই। মা-বাবা খুশি, আখেরাত খুশি, পাড়া-প্রতিবেশি খুশি, সমাজ আর আগাতে হবেনা এটা ভেবে খুশি। নাস্তেক, ব্লগার সবসময় ছিল থাকবে এটা টেনশনের কিছু না। তাদের সাইজ করতে হবে খালি।
আপনাদের হয়তো মন খারাপ হতে পারে বা একটু তর্ক করতে ইচ্ছে হতে পারে কারন ব্যাপারটা কেমন একটু ইয়ে হয়ে গেলনা। হ্যা, তয় এগুলা পছন্দ হোক আর নাহোক এই দুই লাইনে এখন সব শান্তি আর নাহয় খুন, গর্দন, ধর্ষন, আগুন, ভূমি দস্যুতা, সাম্প্রদায়িকতা, দূর্নীতি, মহাসড়োকে হত্যা সব কিছু দেখে দেখে ঘুমিয়ে সকালে অফিস করতে যান। তবে আপনার যদি অনেক অনেক টাকা (মানে আসলে অনেক অনেক টাকা) থাকে তাহলে অবশ্য সব কিছু অন্য রকম। কতটা অন্যরকম তা অবশ্য বলতে পারব না।